প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রযুক্তিনির্ভর জাতি গঠনে তার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। আজকে বিশ্ব যখন প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং বর্তমান যুগটাই প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে; তখন বাংলাদেশ পেছনে থাকবে তা হতে পারে না।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা সব সময় এগিয়ে থাকতে চাই। আর সেই চিন্তা থেকেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। যার সুফল এখন দেশবাসী পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নতুন প্রজন্মকে এমনভাবে শিক্ষিত করতে চাই যেন প্রতিযোগিতাময় বিশ্বের সঙ্গে তারা তাল মিলিয়ে চলতে পারে। সেজন্য প্রযুক্তি শিক্ষাটা একান্তভাবে দরকার।’
প্রযুক্তির ব্যাপকতা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রযুক্তিনির্ভর একটা জাতিগোষ্ঠী গড়ে তুলতে চাই। নতুন প্রজন্ম যেন আরও বেশি আগ্রহী হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কম্পিউটার শিক্ষা, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করে দিচ্ছি।’
এসব পদক্ষেপের পেছনে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, এগুলো শুধু নিজেদের শিক্ষার জন্যই নয়, রফতানি খাতেও ডিজিটাল ডিভাইস অনেক বেশি অবদান রাখতে পারে। আমাদের ছেলেমেয়েরাও ঘরে বসে শিখে শুধু অনলাইনে এখন আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে অনেক অর্থ উপার্জন করতে পারছে। সেই সুযোগটা আমরা সৃষ্টি করেছি।’
সরকার প্রধান বলেন, এই যে আমরা কথা বলতে পারছি বা আজকে টাকা পাঠানো, ক্রয়-বিক্রয় থেকে শুরু করে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা মানুষ পাচ্ছে। মানুষের জীবনমান উন্নত হচ্ছে। অনলাইনে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে সবকিছু যে হচ্ছে তার ফলে আমরা মনে করি যে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণেরও সুযোগ হচ্ছে। দেশের অর্থনীতিও আরও শক্তিশালী হচ্ছে। একেবারে গ্রাম পর্যায়ের মানুষ যেন কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় সেই ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিচ্ছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৭২ হাজার বর্গফুটের শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেটর কেন্দ্রে বহুমুখী প্রশিক্ষণ, উচ্চমানের স্টার্টআপস, বৃষ্টির পানি সংগ্রহ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি সুবিধা রয়েছে। একইসঙ্গে দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণে এখানে সব ধরনের ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে।
সেন্টারটি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে তরুণ-যুবকরা ট্রেনিং নেবে, এর ফলে দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। তারা নিজেরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।’ চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘উদ্যোক্তা হতে হবে। চাকরি না করে চাকরি দেব এ চিন্তাটা থাকতে হবে।’
একই অনুষ্ঠান থেকে শেখ হাসিনা সাতটি জেলা ও ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন এবং ফেনী ১১৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতার সাতটি জেলা হল- ঢাকা, ফেনী, গোপালগঞ্জ, নাটোর, পাবনা, জয়পুরহাট এবং মেহেরপুর।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এম তাজুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ও ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, একেএম রহমতউল্লাহ এমপি, শহীদুজ্জামান সরকার এমপি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।