বান্ধবির সাথে মজা করে বাবুগঞ্জের পর্যটনকেন্দ্র দূর্গাসাগর দীঘিতে বান্ধবিকে খুশি করতে সাঁতার কাটতে গিয়ে পানিতে ডুবে নিখোঁজ রয়েছেন বরিশাল রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের সহকারী উপপরিদর্শক ও নগরীর কাউনিয়া হাউজিং এলাকার শাহআলম’র ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ওমর ফারুক হৃদয়(২৬)। এঘটনা ঘটেছে গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে বাবুগঞ্জের মাধবপাশা ইউনিয়নের দূর্গাসাগর দীঘিতে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী দীঘির পানিতে ডুবে যাওয়া ওমর ফারুক হৃদয় তার বান্ধবী মোসাঃ রাকিন আক্তার এবং বন্ধু তায়মনকে নিয়ে তিন জনে দূর্গাসাগর এলাকায় ঘুরতে এসেছিল। বন্ধু এবং বান্ধবীর দেয়া তথ্যানুযায়ী ওমরফারুক নিজে সাতরে দীঘির মধ্যবর্তি মাটির দ্বীপে যাওয়ার সাহসিকতা দেখাতে দীঘির পানিতে নেমে পরে। কিছুদূর যেতে না যেতে সে পানিতে ডুবে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় মোসাঃ শেফালী বেগম জানান, তার শিশু সন্তান দীঘির পার্শ্ববর্তি চন্দ্রদ্বীপ স্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৫ম শ্রেণির সমাপনি পরীক্ষা দিচ্ছে। সন্তানের পরীক্ষা শুরু হলে সময় কাটানোর জন্য তিনি দুর্গাসার দীঘির পাড়ে আসেন। তিনি তখন ওই তিনজনকে একসাথে দেখতে পান, তারা কোন বিষয়ে কথা বলছিল হাসাহাসি করছিল। কিছুক্ষন পর একটি ছেলে দীঘির পানিতে নেমে সাতার শুরু করে। ছেলেটি দীঘির মধ্যবর্তি মাটির ঢিবি এবং তীর থেকে মাঝ দিঘিতে ডুবে যাচ্ছিল। সে সাহায্যের জন্য প্রাণপনে হাত নাড়াচ্ছিল। এমন দৃশ্য দেখে পাড়ে থাকা তার বন্ধু এবং বান্ধবী মজা করে হাত নেড়ে বিদায় সম্ভাষণ জানাচ্ছিল। দেখতে না দেখতে ছেলেটি পানিতে ডুবে গেল। অবস্থা বেগতিক দেখে একপর্যায়ে তার বান্ধবী এবং বন্ধু পালাবার চেষ্টা চালায়। কিন্তু তিনি বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাদের পথ রোধ করে চিৎকার করে জনসাধারনের সহায়তায় তাদের পালিয়ে যাওয়া বাধাগ্রস্থ করে। সংবাদ পেয়ে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ এবং ডুবুরি দল ঘটনা স্থলে পৌঁছে রাকিন এবং তায়মনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। ডুবুরীদল সন্ধা পর্যন্ত চেষ্টা করেও হৃদয়কে উদ্ধার করতে পারেনি। ধারনা করা হচ্ছে এতক্ষনে ওমর ফারুক হৃদয় আর বেঁচে নেই। নিখোঁজ ওমর ফারুক ২০১৮ সালে ঢাকা আহসান উল্লাহ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাস করে এবং আগামী সপ্তাহে ময়মনিসিংহের একটি টেক্সটাইলে যোগদানের কথা ছিল।
রাকিন বরিশাল নগরীর শীতলাখোলা এলাকার মোঃ জসিম উদ্দিনের মেয়ে এবং তায়মন হৃদয় কাউনিয়া হাউজিং এলাকার রফিকুল ইসলাম খানের ছেলে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শহিদুল ইসলাম জানান, দুর্গাসাগর একটি বিনোদনের স্থান। এখানে সাঁতার কাটার কোন ব্যবস্থা নেই। তারপরও ওই যুবক কেন ও কিভাবে সাঁতার কাটতে নামলো তা তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।