পিরোজপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মাঝে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি কোপাকুপির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার রাত থেকে আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত দুই গ্রুপের মাঝে তিন বার কোপাকুপির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাবেক পৌর কাউন্সিলর সহ ৪ জন জখম হয়েছে। আজ দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে পিরোজপুর শহরের নড়াইলপাড়া এলাকায় পৌর সভার সাবেক কাউন্সিলর শাহজাহান হাওলাদারকে কুপিয়ে জথম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
এর আগে আজ দুপুর ১২ টার দিকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে সামনের সড়কের সিঙ্গার শো-রুমের সামনে কলেজ ছাত্র তানভীর খানকে কুপিয়ে জখম করে সাবেক কাউন্সিলর শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা জুনায়েত আহম্মেদ রাসেলের লোকজন। এছাড়া গতকাল শুক্রবার রাতে আহত ছাত্র তানভীর খানের ভাই ছাত্রলীগ কর্মী সাব্বির রহমান অনুরাগের নেতৃত্বে কুপিয়ে জখম করে ছাত্রলীগ নেতা রাহেল হাওলাদার ও সজিব হাওলাদারকে।
আহত সাবেক কাউন্সিলর শাহজাহান হাওলাদার (৫৪) পিরোজপুর পৌর এলাকার দক্ষিণ কৃষ্ণনগর এলাকার আলী হোসেনের পুত্র। আহত কলেজ ছাত্র তানভীর খান (২৫) পিরোজপুরের জুজখোলা গ্রামের ইলিয়াস খানের পুত্র এবং সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। আহতরা হলো পিরোজপুর পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: রাহেল হাওলাদার (২৪) শহরের কৃষ্ণনগর এলাকার শাহাজাহান হাওলাদারের পুত্র এবং সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মো: সজিব শেখ (২৫) একই এলাকার মজিবর শেখের পুত্র।
সাবেক কাউন্সিলর শাহজাহান হাওলাদার জানান, দুপুরে তিনি নড়াইলপাড়া এলাকায় তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সামনে ছিলেন। এ সময় সন্ত্রাসী সাব্বির রহমান অনুরাগ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কয়েকজনকে সাথে নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। আহত কলেজ ছাত্র তানভীর খান (২৫) পিরোজপুরের জুজখোলা গ্রামের ইলিয়াস খানের পুত্র এবং সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। বর্তমানে আহত অবস্থায় তানভীর পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তানভীর খান জানান, তার ছোট ভাইয়ের সাথে শত্রুতার জেড় ধরে আজ দুপুরে জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি জসিম খানের সমর্থক স্থানীয় সন্ত্রাসী মিরাজের নেতৃত্বে ১০-১৫ জন লোক হাসপাতালে সামনে তাদের খাবার হোটেলের ভিতরে ঢুকে তার উপর হামলা চালায় এবং হোটেলের ভিতরে ভাংচুর করে। এ সময় হোটেল ভাংচুর ঠেকাতে গেলে তারা তাকে ধারালো অন্ত্র দিয়ে মাথায় কোপ দেয় এবং দোকানের ক্যাশ বাংক্স দিয়ে টাকা লুটপাট করে চলে যায়। পরে আশেপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
আহত রাহেল হাওলাদার জানান, পূর্বপরিকল্পিত ভাবেই রাত ৯ টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মী সাব্বির তার সাথে কয়েকজন নিয়ে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের সামনের সড়কে সিঙ্গার শোরুমের সামণে হঠাৎ করে তার ও সজিবের উপর দা দিয়ে কোপ দেয় এবং মারধর শুরু করে। এ সময় দায়ের কোপে তার হাতের নানা অংশ ও সজিবের হাতের তালার বেশি অংশ কেটে যায়। পরে ডাক-চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সাব্বির সহ অন্যরা পালিয়ে যায়। পরে লোকজন সজিব ও তাকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আরিফ হাসান জানান, আহত কলেজ ছাত্রের মাথায় আঘাত আছে।
তাকে হাসপাতলে ভর্তি করে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে এবং সাবেক পৌর কাউন্সিলের মাথার আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে রাতের ঘটনায় ডা. রানা সাহা জানান, দুই জনের হাতেরই ধারালো কিছু দিয়ে আঘাতর চিহ্ণি রয়েছে। এছাড়া সজিবের হাতের আঘাত গুরত্বর হওয়ায় ওকে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জন্য বলা হয়েছে। পিরোজপুর সদর থানার ওসি মো: নুরুল ইসলাম বাদল জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।